আবরার হত্যা মামলায় ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

আবরার হত্যা মামলায় ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ৫ জনের যাবজ্জীবনও বহাল

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ আসামির সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে।

রোববার (১৬ মার্চ) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন তিনি। এ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

তদন্ত অনুযায়ী, ঘটনার দিন কুষ্টিয়ার নিজ বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন আবরার ফাহাদ। ফেসবুকে দেওয়া ভারতবিরোধী একটি পোস্টের জেরে রাত ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। রাতভর শারীরিক নির্যাতনের পর ভোররাতে জানা যায়, তাকে হলের সিঁড়ির মাঝখানে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন (৭ অক্টোবর) চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—
মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম ওরফে তানভির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মো. মিজানুর রহমান মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মোর্শেদ ওরফে অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (পলাতক), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল ওরফে জিসান (পলাতক) এবং মুজতবা রাফিদ (পলাতক)।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন—
অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মো. মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা।

২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি নিম্ন আদালতের রায় পর্যালোচনার জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাবন্দি আসামিরা জেল আপিল করেন এবং অনেকে ফৌজদারি আপিলও করেন। ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্টে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।

অবশেষে, আজ হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.