“ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ নানা অপরাধে রাবির ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার”

“ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ নানা অপরাধে রাবির ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া আরও ১৫ শিক্ষার্থীকে অপরাধের ভিত্তিতে হলের আবাসিকতা বাতিল, জরিমানা এবং অন্যান্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সুপারিশে গত ১২ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৫৩৫তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তবে প্রাথমিকভাবে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শাস্তির বিস্তারিত

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অপরাধের ধরণ ও মাত্রার ওপর ভিত্তি করে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • ৬ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে এবং ছাত্রত্ব না থাকলে তাঁদের সনদ বাতিল করা হবে।
  • ৫ জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার।
  • ৪ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার।
  • ২ জনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার।
  • ১ জনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।
  • ১ জনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।
  • ১৪ জনের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে।
  • ৫ জনকে মুচলেকার মাধ্যমে হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শাস্তিপ্রাপ্ত ৫ জন শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে শাস্তি দেওয়া হলেও অধিকতর তদন্তের পর তাঁদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ভবিষ্যৎ নির্দেশনা

স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃতদের বাদ দিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে হলে থাকার অনুমতিপ্রাপ্ত ৫ জনসহ অন্য শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কোনো অপরাধে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

প্রশাসনের বক্তব্য

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “শাস্তির সিদ্ধান্তগুলো বিভিন্ন সময়ে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে। প্রক্টর দপ্তর, বিভিন্ন বিভাগ এবং হল থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ পর্যালোচনা করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা শাস্তিপ্রাপ্তদের নাম-পরিচয় এখনই প্রকাশ করছি না। সংশ্লিষ্ট বিভাগে সিদ্ধান্ত পাঠানো হলে বিস্তারিত জানা যাবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একটি বড় অংশ একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য। তবে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক বিবেচনা করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধে জড়িত যেকোনো শিক্ষার্থী দল-মত নির্বিশেষে শাস্তির আওতায় আসবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.