সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এসব কথা বলেন।

নুরুল হক বলেন, “আজকের এই দিনে আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। ধন্যবাদ জানাই অন্তর্বর্তী সরকারকে, যারা দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। আমাদের প্রত্যাশা, ছাত্র-জনতার লড়াই এবং সংগ্রামের মাধ্যমে যে পরিবর্তন এসেছে, তা টেকসই ও স্থায়ী হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গত দেড় দশকে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের মধ্যে বিরোধী দল হিসেবে আমাদের বিভিন্ন হয়রানি ও নাজেহাল হতে হয়েছে। আজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অনাড়ম্বর পরিবেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেন, এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।”

নুরুল হক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “গত ১৫ বছরে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণ মুক্তিযুদ্ধের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, এই আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এখন গোটা দেশের মানুষ সেই আকাঙ্ক্ষাকে পুনর্গঠনের জন্য উদগ্রীব। অন্তর্বর্তী সরকারকে এটি উপলব্ধি করতে হবে এবং বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম যেভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করেছে, তাতে আশা করা যায় তারা ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করবে।”

নির্বাচন এবং সংস্কার প্রসঙ্গে নুরুল হক বলেন, “আজকের দিনে আমাদের স্মরণ করতে হবে কেন মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছেন। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, এবং সাধারণ মানুষ একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক সমাজ চেয়েছিল। নানা কারণে রাজনৈতিক দলগুলো সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এখন যেহেতু একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, আমরা আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকারকে সহযোগিতা করবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দলের মতামত রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, এই সরকার তা সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করবে।”