ইয়ান বিশপ তাৎক্ষণিকভাবে ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে জাকের আলী ও শামীম হোসেনের কর্মকাণ্ডে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তবে ঘটনাটি এতটাই হৃদয়ছোঁয়া ছিল যে, পরে তিনি নিজের মুগ্ধতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রকাশ করেন। এক্সে আইসিসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশপ সুপারিশ করেন, ২০২৪ সালের ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কার জাকের আলী ও শামীম হোসেনের ওই মুহূর্তকে দেওয়া হোক।
বিশপ তাঁর পোস্টে ব্যাখ্যা করেন, কেন তিনি এই সুপারিশ করছেন। তিনি লেখেন, “যদি আইসিসি ২০২৪ সালের স্পিরিট অব ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে, আমার পরামর্শ সেই মুহূর্তটিকে দেওয়া, যখন সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে জাকের আলী ও শামীম হোসেন রানের জন্য দৌড় থামিয়ে দিয়েছিলেন, এটা বুঝতে পেরে যে, আউটফিল্ডে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টায় ওবেদ ম্যাকয় আঘাত পেয়েছেন।”
এই ঘটনাটি ঘটেছিল সেন্ট ভিনসেন্টে, বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে গুড়াকেশ মোতির প্রথম বলটি জাকের আলী মিড উইকেট বাউন্ডারির দিকে পাঠান। বলটি সীমানার দিকে ছুটে গেলে ওবেদ ম্যাকয় ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু নিতে পারেননি এবং হাতে আঘাত পান।
এদিকে, জাকের ও শামীম রানের জন্য দৌড়াতে থাকেন। দ্বিতীয় রান সম্পন্ন করার পর তাঁরা বুঝতে পারেন, ম্যাকয় আঘাত পেয়েছেন এবং বল তুলতে পারছেন না। এই সুযোগে সহজেই তৃতীয় রান নেওয়া সম্ভব হলেও দুই ব্যাটসম্যান তা থেকে বিরত থাকেন।
জাকের ও শামীমের এই আচরণকে তাৎক্ষণিকভাবে ‘গ্রেট স্পোর্টসম্যানশিপ’ বলে প্রশংসা করেন ইয়ান বিশপ। পরে ম্যাচ শেষে এক্সে পোস্ট দিয়ে তিনি এই ঘটনাকে ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেন।
প্রতি বছর ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম ‘আইসিসি স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কার, যা ক্রিকেটের চেতনাকে সমুন্নত রাখা এবং প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোকে দেওয়া হয়।
২০২৩ সালে এই পুরস্কারটি জিতেছিল জিম্বাবুয়ে দল। ২০১১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত টানা ১২ বছর পুরস্কারটি ব্যক্তি খেলোয়াড়েরা জিতেছেন। এখনো পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি খেলোয়াড় এই পুরস্কার পাননি। তবে জাকের আলী ও শামীম হোসেনের এই কর্মকাণ্ড হয়তো সেই ইতিহাস বদলাতে পারে।
Leave a Reply