যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল: আইনি চ্যালেঞ্জ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলের উদ্যোগ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কেউই নাগরিকত্ব পান। তবে ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করতে চাইছেন, যা তাঁর কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ। এমারসন কলেজের এক জরিপে দেখা গেছে, জনমত এ বিষয়ে বিভক্ত হলেও অনেকে ট্রাম্পের অবস্থানকে সমর্থন করছেন।
নির্বাহী আদেশ জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডেমোক্র্যাট–শাসিত অঙ্গরাজ্য ও নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বেশিরভাগ আইনবিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্প এককভাবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারবেন না এবং এটি আদালতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।
বিশ্বব্যাপী জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অবস্থান
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (Jus Soli) বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৩০টি দেশ এই নীতি অনুসরণ করে, যাদের বেশিরভাগই আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত।
অনেক দেশ ‘Jus Sanguinis’ (রক্তের অধিকার) নীতি মেনে চলে, যেখানে নাগরিকত্ব উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায়। কিছু দেশ উভয় নীতির সংমিশ্রণও ব্যবহার করে, যেমন স্থায়ী বাসিন্দাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান।
নীতিমালার পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান বিধিনিষেধ
কয়েক দশকে অভিবাসন ও জাতীয় পরিচয় সংরক্ষণের জন্য অনেক দেশ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কঠোর করেছে। ভারত, আয়ারল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কিছু দেশ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রদান সীমিত বা বাতিল করেছে। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ২০১০ সালে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে কী প্রভাব ফেলবে, তা আদালতের রায় ও জনমতের উপর নির্ভর করবে।
Leave a Reply