সিলেটে নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ: মিসবাহর অপহরণ রহস্য সামনে আসছে
সিলেট নগরে এক নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ এবং তা ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানালে পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে এবং ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে।
গত সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। পরদিন মঙ্গলবার ভুক্তভোগী নারী সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযুক্তরা হলেন মো. সামরান হোসেন চৌধুরী ও মো. মাহফুজুর রহমান।
ঘটনার বিবরণ:
ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি, মাহফুজুর রহমান এবং সামরান চৌধুরী মিলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে তা ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ২৭ ডিসেম্বর মাহফুজুর ওই নারীকে সামরানের সহযোগিতায় ধর্ষণ করেন এবং পরে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে সামরান ওই নারীকে ভয় দেখান এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
৬ জানুয়ারি অভিযুক্তরা আবারও ওই নারীকে নির্যাতনের চেষ্টা করলে তিনি বিষয়টি ফোনে তাঁর স্বামীকে জানান। পরে তাঁর স্বামী ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে ব্যবস্থা নেয়।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের অপহরণের সংযোগ:
ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর অভিযোগ, ঘটনাটি আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের অপহরণের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাঁর দাবি, মিসবাহর অপহরণের ভিডিও তাঁর কাছে সংরক্ষিত ছিল। অপহরণকারীরা সেটি মুছে ফেলতে এবং মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল। তাঁরা তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং সেই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেন।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে গত ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে অপহরণ করা হয় এবং মুক্তিপণের বিনিময়ে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীর স্বামীর দাবি, অপহরণকারীরা মিসবাহকে যেখানে আটকে রেখেছিল, তার কাছেই তাঁদের বাসা ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে তিনি অপহরণের দৃশ্য দেখেছিলেন এবং সেটি সংরক্ষণ করেছিলেন।
পুলিশের বক্তব্য:
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জিয়াউল হক বলেন, ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদীর স্বামীর অভিযোগটি এজাহারে উল্লেখ নেই। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের অপহরণের বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, দলীয় কোন্দল এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তবে অপহরণের ঘটনায় তাঁর পরিবার বা তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
পুলিশ পুরো ঘটনার প্রকৃত সত্যতা উদঘাটনে কাজ করছে।
Leave a Reply