নড়াইলে ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের

নড়াইলে ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের

নড়াইল সদর উপজেলায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। গত শনিবার রাতে নিহত ইউপি সদস্যের ছেলে নড়াইল সদর থানায় চারজনকে আসামি করে এ মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন নড়াইল সদর উপজেলার ওসমান মোল্যার ছেলে ফারুক মোল্যা (৫০), আইয়ুব আলীর ছেলে রজিবুল মোল্যা (৩০), সাত্তার মোল্যার ছেলে চঞ্চল মোল্যা এবং শহিদ মোল্যার ছেলে শফিকুল ইসলাম। এছাড়া মামলায় এক থেকে দুইজন অজ্ঞাত আসামিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রধান আসামি ফারুক মোল্যাকে গতকাল ভোরে মাগুরার শালিখা উপজেলার হরিশপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, “ইউপি সদস্যকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগে তাঁর ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।”

মামলার বিবরণ

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ওই নারী সদস্য টিসিবির মালামাল সরবরাহ করে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় রজিবুল মোল্যা পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে তাঁকে ইউনিয়নের এক ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে ঘরের মধ্যে আটক করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে আসামিরা তাঁকে ঘটনা গোপন রাখার জন্য হুমকি দেন। ভুক্তভোগী ঘটনা প্রকাশ করার কথা জানালে তাঁকে মারধর করে এবং মুখ চেপে ধরে বিষজাতীয় পদার্থ খাইয়ে দেন। পরে সন্ধ্যায় তাঁকে বাড়ি পাঠানো হয়।

বাড়িতে ফিরে ভুক্তভোগী লজ্জা ও ভয় থেকে কাউকে কিছু না বলে শুয়ে পড়েন। রাতে বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন সকালে চিকিৎসার জন্য যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেদিন বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ ডিসেম্বর রাতে মৃত্যুর আগে ছেলেকে পুরো ঘটনা জানান ওই ইউপি সদস্য।

ভুক্তভোগীর সন্তানের বক্তব্য

আজ রোববার মামলার বাদী বলেন, “মা মৃত্যুর আগে ঘটনার বিস্তারিত আমাকে বলেছেন। মা যে অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, আমি এর ন্যায্য বিচার চাই। যারা আমার মায়ের ওপর এই বর্বরতা চালিয়েছে, তাদের ফাঁসি চাই।”

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভ বিরাজ করছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.