দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটি সতর্ক করেছে, যদি এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তবে দেশের মধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হতে পারে।
বিএনপি বলেছে, রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করতে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি।
গতকাল রাতে বিএনপি একটি বিবৃতিতে এসব কথা জানায়। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিবৃতিটি পাঠান।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার পর, গত বুধবার রাতে খুলনার ‘শেখ বাড়ি’-তে প্রথম হামলার খবর আসে। এরপর কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা হয়। গত দুই দিনে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের ৩৩টি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্তত অর্ধশত ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের আটটি কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, শত শত শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের উসকানিমূলক আচরণ দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলক ভেঙে ফেলতে জনগণের মধ্যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে।”
বিএনপি আরও বলছে, সরকার যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তবে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা বিপদগ্রস্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে উগ্র নৈরাজ্যবাদী, গণতন্ত্রবিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তি এবং পরাজিত ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হতে পারে, যার লক্ষণ ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে।
বিএনপি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, “বর্তমান সরকার গত ছয় মাসেও পলাতক স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে উৎসাহিত হচ্ছে, যা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।”
বিএনপির মতে, জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রদান, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, পলাতক স্বৈরাচারদের দ্রুত বিচার এবং ফ্যাসিস্টদের উসকানিমূলক তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু এসব বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
বিএনপি আরো বলেছে, প্রশাসনে ফ্যাসিস্ট শাসকের দোসররা এখনো বিদ্যমান, বিচার বিভাগেও তারা প্রভাব বিস্তার করে আছে, এবং পুলিশ প্রশাসনে গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী সদস্যরা এখনও সক্রিয়। এসব পরিস্থিতির মধ্যে সরকার জনগণের আশা পূরণে সফল হতে পারবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
Leave a Reply