পেজেশকিয়ানের সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বললেন পুতিন

পেজেশকিয়ানের সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বললেন পুতিন

আন্তজার্তিক ডেস্ক : মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে তাস এ খবর জানিয়েছে।

বৈঠকে পুতিন পেজেশকিয়ানকে বলেছেন, আপনার আজকের সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আমরা কেবল আমাদের সহযোগিতার সমস্ত ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাব না, আমরা রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়ে একটি প্রধান মৌলিক চুক্তিও সই করব।

ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে বাস্তবিক সহযোগিতা বাড়াতেই নতুন চুক্তি সই হচ্ছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, মস্কো ও তেহরান দীর্ঘদিন ধরে এই চুক্তি নিয়ে কাজ করছিল।

পুতিন বলেন, আমি খুব খুশি যে, এই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের সহযোগিতার কার্যত সমস্ত ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গতি আনার সুযোগকে উন্মুক্ত করবে।

এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, বাণিজ্য ও সামরিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে দুই নেতা ‘সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ করবেন।

২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের আগে এই চুক্তি সই হচ্ছে। তিনি ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের অভিষেকের সঙ্গে চুক্তির কোনো ধরনের যোগসূত্র নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই চুক্তি সইয়ের পরিকল্পনা অনেক আগেই করা হয়েছিল।

গত বছর ইরান উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর ব্রিকস ব্লকে যোগ দেয়। পেজেশকিয়ান কাজানে রাশিয়া আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।

অতীতে সম্পর্কের টানাপোড়েন থাকা রাশিয়া ও ইরান ১৯৯১ সালে সোভিয়েত পতনের পর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে। মস্কো তেহরানের জন্য প্রধান বাণিজ্য অংশীদার এবং অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়। এরপর থেকে ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে।

রাশিয়া ইরানে প্রথম পরমাণু কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। ২০১৩ সালে এটি চালু হয় এবং সেখানে আরও দুটি পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ চলছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো বলে আসছে, তেহরান রাশিয়াকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য শত শত বিস্ফোরক ড্রোন সরবরাহ করেছে। যদিও মস্কো ও তেহরান এটি অস্বীকার করেছে।

চুক্তির খসড়া তৈরির সময় রাশিয়ায় ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালি বলেছিলেন, ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতা সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে ‘একটি ভূমিকা এবং ৪৭টি অনুচ্ছেদ’ রয়েছে।

সম্প্রতি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছিলেন, এই চুক্তি দুই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রসহ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য আমাদের পক্ষগুলোর প্রতিশ্রুতির রূপরেখা প্রকাশ করবে।

প্রসঙ্গত, গত জুনে পিয়ংইয়ংয়ে এক শীর্ষ সম্মেলন শেষে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত চুক্তি সই করেন। চুক্তিতে সশস্ত্র আক্রমণের ক্ষেত্রে এক দেশ অপর দেশকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সূত্র : খালিজ টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published.