বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শীর্ষ ১০ বিদেশি ক্রেতা
বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড তৈরি পোশাক আমদানি করে। এর মধ্যে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠান দেশের রপ্তানি হওয়া পোশাকের প্রায় ২৯ শতাংশ কিনে থাকে। শীর্ষে রয়েছে সুইডেনের বহুজাতিক খুচরা বিক্রেতা এইচঅ্যান্ডএম, এরপর রয়েছে স্পেনের ইন্ডিটেক্স এবং আয়ারল্যান্ডের প্রাইমার্ক। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই তিন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।
শীর্ষ ১০ ক্রেতার তালিকা:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ক্রেতাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকায় উল্লেখিত ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে গড়পড়তা সস্তা থেকে মাঝারি মূল্যের পোশাক কেনে। তবে জাপানের ইউনিক্লো তুলনামূলক উচ্চ মূল্যের পোশাক কিনে।
শীর্ষ ক্রেতা এবং তাদের কেনাকাটা:
- এইচঅ্যান্ডএম (সুইডেন):
- ক্রয় পরিমাণ: ২৫৯ কোটি ডলার।
- মূলত নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের পোশাক।
- গড় মূল্য: ৩ ডলার/পিস।
- ইন্ডিটেক্স (স্পেন):
- ক্রয় পরিমাণ: ২১৮ কোটি ডলার।
- প্রধান ব্র্যান্ড: জারা, পুল অ্যান্ড বিয়ার।
- গড় মূল্য: ৩.৫ ডলার/পিস।
- প্রাইমার্ক (আয়ারল্যান্ড):
- ক্রয় পরিমাণ: ১১২ কোটি ডলার।
- গড় মূল্য: ৩ ডলার/পিস।
- বেস্টসেলার (ডেনমার্ক):
- ক্রয় পরিমাণ: ৭৯ কোটি ডলার।
- গড় মূল্য: ৪.৬৬ ডলার/পিস।
- মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার (যুক্তরাজ্য):
- ক্রয় পরিমাণ: ৭৮ কোটি ডলার।
- গড় মূল্য: ৩.৭৪ ডলার/পিস।
- সিঅ্যান্ডএ (নেদারল্যান্ডস):
- ক্রয় পরিমাণ: ৭২ কোটি ডলার।
- গড় মূল্য: ৩.৬২ ডলার/পিস।
- ইউনিক্লো (জাপান):
- ক্রয় পরিমাণ: ৭১ কোটি ডলার।
- গড় মূল্য: ৫.৪১ ডলার/পিস।
- এলপিপি (পোল্যান্ড):
- ক্রয় পরিমাণ: উল্লেখযোগ্য।
- পোশাকের ধরন: গড় মূল্যের ফ্যাশন।
- নেক্সট (যুক্তরাজ্য):
- ক্রয় পরিমাণ: উল্লেখযোগ্য।
- গড় মূল্য: ৩.৫ ডলার/পিস।
- পেপকো (পোল্যান্ড):
- ক্রয় পরিমাণ: উল্লেখযোগ্য।
বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের অবস্থান:
বিশ্বের বিলাসবহুল ব্র্যান্ডগুলো যেমন লুই ভিতোঁ, ডিওর, গুচি, এবং নাইকি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনে না। তবে জার্মানির অ্যাডিডাস গত অর্থবছরে ২ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। এদের গড় মূল্য ছিল ২৩ ডলার/পিস।
বাংলাদেশের পোশাকের বৈশিষ্ট্য:
বাংলাদেশ মূলত সস্তা এবং মধ্যম দামের পোশাক উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ। এর কারণ দেশটির কারখানাগুলো প্রতিযোগিতামূলক মূল্য এবং দক্ষ শ্রমশক্তি দিয়ে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞ মতামত:
সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত এক হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক ক্রেতার চাহিদা মেটাচ্ছে, যা আমাদের খাতের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে।”
এভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ ক্রেতার চাহিদা পূরণ এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশের পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।
Leave a Reply