ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেছেন, কিছু হাইব্রিড নেতাকর্মী বিএনপির নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করছে। প্রকৃত ত্যাগী নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর ফেরারি জীবন কাটিয়েছেন, অথচ কিছু ব্যক্তি লোভ সামলাতে না পেরে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। যারা আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলেন না, তারা বিএনপিতে কোনো পদ-পদবী পাবেন না।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে পল্টন থানা বিএনপি আয়োজিত “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে” বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থাপিত ৩১ দফা সংস্কার ও জনসম্পৃক্ততার ধারাবাহিক কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি উপস্থাপন ও বিশ্লেষণ করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ হারুন, এসকে সেকান্দার কাদের, ফরহাদ হোসেন, গোলাম হোসেন, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, কৃষক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাজী কামাল হোসেন, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ মোর্শেদ পাপ্পা সিকদার, মহিলা দলের সভানেত্রী রুমা আক্তার, পল্টন থানার সাবেক সভাপতি লোকমান হোসেন ফকির, সাধারণ সম্পাদক কাজী হাসিবুর রহমান শাকিলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ
রফিকুল আলম মজনু বলেন, বাংলাদেশে এর আগেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছে, যারা নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার নির্বাচিত করেছে। এজন্য মানুষ তাদের শ্রদ্ধা করে। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের প্রতিও তিনি একই ধরনের দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান জানান এবং বলেন, “ক্ষমতার লোভ যেন আপনাদের গ্রাস না করে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকারের যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, তারেক রহমান তা তিন বছর আগেই বলেছেন। তার ৩১ দফা সংস্কারে ঐক্য, সম্প্রীতি, নারী ক্ষমতায়ন ও অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।”
ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি
তিনি অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে প্রশাসনের শৃঙ্খলা ধ্বংস করে দিয়েছেন। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যাতে দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক শক্তির কার্যক্রম প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে।”
মজনু আরও বলেন, “নিজেরা বোমাবাজি ও ভাঙচুর করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতো। দেশের সকল গুম-খুনের মূল হোতা শেখ হাসিনা। যেকোনোভাবে হোক, তাকে ভারত থেকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”
আসন্ন নির্বাচন ও ষড়যন্ত্র
বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, “আগামী নির্বাচনের আগে যে কোনো ষড়যন্ত্র ও বাধাবিপত্তির বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কোনো অপশক্তি যাতে নির্বাচনকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, “স্বৈরশাসকরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও এখনো দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি ১৬ বছর ধরে জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে আসছে। অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। যদি নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করা হয়, তাহলে আমরা আবারও রাজপথে নামব, প্রয়োজনে জীবন দেবো, কিন্তু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব ইনশাআল্লাহ।”
Leave a Reply