১৬৩২ সালে ডাচ শিল্পী ম্যাথিয়াস স্টমারের আঁকা চিত্রকর্ম ‘অ্যাডোরেশন অব দ্য শেপার্ডস’ ছবিটি আমাদের ক্রিসমাসের চেতনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আজ ২৫ ডিসেম্বর, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মহাসমারোহে উদ্যাপিত বড়দিন। আজ থেকে প্রায় দুই হাজার তেইশ বছর আগে মেরির কোলে বেথলেহেমের এক জীর্ণ গোশালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঈশ্বরতনয় যিশু, যাঁর মাধ্যমে মানবজাতির মুক্তির বার্তা এসেছিল।
প্রভু যিশু ত্রিশ বছর বয়সে তাঁর প্রচারকার্য শুরু করেন। তাঁর বাণী মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যেত। পাপ, অসত্য ও অন্যায় থেকে মন ফিরিয়ে সত্য, সুন্দর ও ভালো কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাতেন। তাঁর শিক্ষা ছিল পাপকে ঘৃণা করা, কিন্তু পাপীকে নয়। অবহেলিত ও নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে যিশু শত্রুকেও ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছিলেন।
যিশুর অসংখ্য অলৌকিক কাজ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মানুষকে শান্তি ও সেবার পথে আহ্বান জানিয়েছে। তিনি শিষ্যদের শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন: ‘শান্তি তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি, আমারই শান্তি তোমাদের দান করছি।’ এই শান্তি চিরস্থায়ী ও ঐশ্বরিক, যা জগতের কষ্ট-সংঘাত ছাপিয়ে মানবহৃদয়ে স্থান পায়।
তাঁর জন্মের পবিত্র বার্তা আজও আমাদের জীবনে প্রাসঙ্গিক। বর্তমান সময়ে, যিশুর জন্মস্থানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, যুদ্ধ ও সহিংসতা চলছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, ইউক্রেন-রাশিয়া সহ বহু স্থানে মানুষের জীবন যন্ত্রণায় পরিপূর্ণ। তবুও বাইবেলের ঐশ বাণী আমাদের শান্তির আহ্বান জানায়: ‘জয় ঊর্ধ্বলোকে পরমেশ্বরের জয়। ইহলোকে নামুক শান্তি।’
বড়দিন আমাদের আহ্বান জানায় উদার হতে, সংকীর্ণতা ত্যাগ করে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির পথে এগিয়ে যেতে। আমরা যেন পরিবারের মধ্যে, সমাজে এবং বিশ্বে শান্তির দূত হয়ে উঠি। প্রভু যিশুর শিখানো এই ঐশ শান্তি স্থাপন করা আমাদের সকলের পবিত্র দায়িত্ব।
এই বড়দিনে আমাদের প্রার্থনা হোক—সব যুদ্ধ, সংঘাত ও হানাহানি বন্ধ হোক। পৃথিবীতে নেমে আসুক স্বর্গীয় শান্তি। বড়দিন সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি, একতা ও সম্প্রীতি। সকলকে বড়দিনের প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
Leave a Reply