সংস্কারের সময়সীমা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে: তারেক রহমান

সংস্কারের সময়সীমা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে: তারেক রহমান

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আজ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আর কত সময় প্রয়োজন, তা জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।” তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, যদি কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের অস্বস্তিতে ফেলে, তবে তা গণআকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

আলোচনা সভায় তিনি প্রশ্ন রাখেন, “অন্তর্বর্তী সরকার আসলে কী করতে চায়?” তিনি বলেন, জনগণের সামনে স্পষ্টভাবে কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করা সরকারের দায়িত্ব। এটি শুধু স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে না, প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশীলতা আনবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে, জনগণ তত বেশি সমর্থন দেবে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, জনজীবনের দুর্ভোগ ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করলে, জনগণের সামনে প্রশ্ন উঠবে—”সংস্কার আগে, নাকি সংসার আগে?”

ডেঙ্গুতে প্রতিদিন মৃত্যুর পাশাপাশি চিকিৎসা খরচ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জনগণ সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। জনগণ চায়, অন্তর্বর্তী সরকার সফল হোক। তবে সরকারের কার্যক্রমই প্রমাণ করবে তারা নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না।

বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দল–মত, ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে।

দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “অচিরেই নির্বাচনী রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। সেই যাত্রায় জনগণই আপনাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সঙ্গী হবে। জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং তাদের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।”

তারেক রহমান আরও বলেন, ১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের বছর। আর ২০২৪ হবে স্বাধীনতা রক্ষার বছর। এবারের বিজয় দিবস একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে উদযাপিত হওয়ায় তা আরও গৌরবময় ও তাৎপর্যপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সংস্কারের পথ সুগম করা এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে ষড়যন্ত্র বন্ধ করা সম্ভব। তিনি বলেন, “দেশ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না।”

সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, “আমাদের অধিকার অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।”

নজরুল ইসলাম খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের ইচ্ছাতেই দায়িত্বে এসেছে। তবে তাঁদের মধ্যে কিছু সদস্যের মন্তব্যে বিভ্রান্তি দেখা যায়। তিনি মন্তব্য করার আগে সাবধানতার পরামর্শ দেন।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “অরক্ষিত স্বাধীনতা পরাধীনতার চেয়ে ভয়ংকর।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সেলিমা রহমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালামসহ দলীয় নেতারা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.