৬ বছর ধরে গোপন কারাগারে গুম, নির্যাতন ও খুনের কেন্দ্রবিন্দু ‘হাসিনা’

৬ বছর ধরে গোপন কারাগারে গুম, নির্যাতন ও খুনের কেন্দ্রবিন্দু ‘হাসিনা’

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আজ দুইটি মামলার শুনানি ছিল। একটি মামলা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের এবং অন্যটি তাঁর মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে।

প্রসিকিউটরের বক্তব্য:
তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে কৌশলগতভাবে গোপন কারাগারে হাজার হাজার মানুষকে আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি সিমেন্টের বস্তায় লাশ বেঁধে নদীতে ফেলার মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তদন্তে এসব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। কিছু গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের স্বীকারোক্তিও এ অভিযোগকে সমর্থন করেছে।”

তদন্ত অগ্রগতি:

  • তাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এসব অপরাধের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়েছে। পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময়ের প্রয়োজন হওয়ায় আদালত আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
  • সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গ:
ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও তিনি দেশে অবস্থান করছিলেন। আদালত জানতে চেয়েছেন, কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং কীভাবে তিনি দেশ ছাড়লেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের নির্দেশ:

  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাঁকে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আদালত।
  • ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ চুক্তির ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত প্রক্রিয়ার জটিলতা:
তাজুল ইসলাম বলেন, “এই মামলার তদন্তের গভীরতা ও পরিধি অনেক বিস্তৃত। দ্রুত তদন্ত সম্পন্নের জন্য আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।”

প্রসিকিউটরের আহ্বান:
চিফ প্রসিকিউটর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আইনের প্রতি আনুগত্য না দেখিয়ে আসামিদের পালাতে সহযোগিতা করা হলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর নির্দেশ মানা সকল সংস্থার আইনি দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্ন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published.