সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে বিমানে করে অজ্ঞাত গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানীতে প্রবেশ করলে এই ঘটনা ঘটে। এর পরপরই রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। তারা “স্বাধীনতা” স্লোগান দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
এদিকে, দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) আল জাজিরার একটি লাইভ আপডেটে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তবে বিদ্রোহীদের হাতে পুরোপুরি দামেস্কের পতন ঘটেছে কিনা এবং প্রেসিডেন্ট আসাদের ২৪ বছরের শাসনের সমাপ্তি হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন
পূর্ববর্তী ১০ দিনের সংঘর্ষে সিরিয়ার সেনাবাহিনী কার্যত ভেঙে পড়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর অধিকাংশ সদস্য বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তাদের লড়াইয়ের মনোবল ছিল খুবই কম।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। উমাইয়াদ স্কোয়ারে দেখা গেছে, কিছু মানুষ পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে গান গাইছেন এবং আনন্দ উদযাপন করছেন।
এছাড়া, বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দামেস্কের বিভিন্ন স্থানে সরকারি সৈন্যদের শহর ছেড়ে পালানোর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তবে গোলাগুলির উৎস এখনও নিশ্চিত নয়।
বিদ্রোহ ও যুদ্ধের পটভূমি
বাশার আল আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। তার শাসনের বিরোধিতা শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। সেই সময় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে কঠোর পন্থা অবলম্বন করলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়, যা পরিণত হয় গৃহযুদ্ধে।২০১৫ সালে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে আসাদের অবস্থান শক্তিশালী হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়া এবং রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা নতুন করে সংগঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্রোহীদের হামলায় প্রেসিডেন্ট আসাদ দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে যান।
এই নাটকীয় ঘটনা সিরিয়ার যুদ্ধের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
December 22, 2024
Leave a Reply