“আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি, আরও ৮টি কারখানা বন্ধের ঘোষণা”

“আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি, আরও ৮টি কারখানা বন্ধের ঘোষণা”

সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা বার্ষিক মজুরি ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন।

সরকারঘোষিত বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকেরা তাঁদের দাবি জানিয়ে আসছেন। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আজ ৮টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা গতকাল বন্ধ হওয়া ১১টি কারখানার সঙ্গে যুক্ত হলো।

বিজিএমইএ-এর তথ্যমতে, শ্রম আইন-২০০৬-এর ১৩(১) ধারা অনুসারে আজ যেসব কারখানা বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলো হলো:

  • এজে সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড
  • মাম গার্মেন্টস লিমিটেড
  • ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড
  • নাসা সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড
  • নাসা বেসিক লিমিটেড
  • ট্রাউজার লাইন লিমিটেড
  • আল মুসলিম অ্যাপারেলস
  • এস সুহি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক

আজকের পরিস্থিতিতে আশুলিয়ায় কাজ বন্ধ থাকা কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টি, যেখানে ৮টি কারখানায় সবেতনে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

শ্রম আইন অনুযায়ী, বেআইনি ধর্মঘটের কারণে মালিকপক্ষ কারখানার শাখা বা বিভাগ বন্ধ করতে পারেন। এ ধরনের বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকেরা মজুরি পাবেন না।

শ্রমিক নেতাদের মতে, শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। তাঁরা বার্ষিক অর্জিত ছুটির টাকা পূর্ণ পরিশোধ এবং মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত চান।

শিল্পাঞ্চল পুলিশের তথ্য:
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ–১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, আজ ১৩টি কারখানায় কাজ বন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি কারখানা আজকের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।

শ্রমিকদের বক্তব্য:
নিউএইজ গ্রুপের এক নারী শ্রমিক জানিয়েছেন, তাঁরা বেতন বৃদ্ধি ও ইনক্রিমেন্টের দাবি আদায়ে গত কয়েক দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন। আজ তাঁরা একটি খুদে বার্তায় জানতে পেরেছেন, তাঁদের কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শ্রমিক সংগঠনের মন্তব্য:
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক। শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন।”

সামগ্রিক পরিস্থিতি:
শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সরকারের ভূমিকা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। উত্তেজনা কমিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এই প্রতিবেদনটি শ্রমিকদের চলমান দাবিদাওয়া এবং কারখানার পরিস্থিতি তুলে ধরেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.