সংশোধিত পাঠ:
লক্ষ্মীপুরে দুই মাসের ব্যবধানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানি ঘটে পাঁচজনের। বিস্ফোরণের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার।
দুর্ঘটনার বিবরণ:
গত ১১ ডিসেম্বর ভোরে, লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইসলাম মার্কেট এলাকায় গ্রিন লিফ ফিলিং স্টেশনে গ্যাস রিফিলের সময় আল মদিনা বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে দুজন নিহত ও তিনজন আহত হন। এর আগে, ১৪ অক্টোবর একই স্টেশনে আরেকটি বাসে গ্যাস রিফিলের সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হন।
তদন্ত ও বিশেষজ্ঞ মতামত:
- বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মতে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত সিলিন্ডারগুলোতে জোড়া দেওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা সিএনজি গ্যাসের মানসম্মত সিলিন্ডারে থাকার কথা নয়।
- চট্টগ্রাম বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, সিলিন্ডারগুলোর মান পরীক্ষায় ঘাটতি রয়েছে এবং বিধি অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সিলিন্ডার রিটেস্টের প্রয়োজন হলেও তা মানা হয় না।
- ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার সাহা বলেন, নিম্নমানের সিলিন্ডারগুলো সহজেই বিস্ফোরণের ঝুঁকি তৈরি করে।
ব্যবস্থাপনার ঘাটতি:
- বিআরটিএ ও পুলিশের তদারকির অভাবে অনেক যানবাহন মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার ব্যবহার করছে।
- লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই, ফলে পাশের জেলায় গিয়ে রিটেস্ট করতে হয়।
সচেতন মহলের উদ্বেগ:
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জেড এম ফারুকী বলেন, “প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নিলে প্রথম দুর্ঘটনার পর দ্বিতীয় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”
প্রশাসনের পদক্ষেপ:
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার জানান,
- ভ্রাম্যমাণ আদালত ও বিআরটিএকে তদারকির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
- সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর মালিকদের ফিটনেস সনদ ছাড়া গ্যাস সরবরাহ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের অবস্থান:
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বাসমালিকদের অবহেলা স্পষ্ট। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।”
উপসংহার:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিয়মিত সিলিন্ডার পরীক্ষা, প্রশাসনের তদারকি এবং ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
Leave a Reply