রাশমিকার জনপ্রিয়তার গল্প: দক্ষিণি থেকে সর্বভারতীয় তারকা
ভালোই ছিলেন রাশমিকা মান্দানা। দক্ষিণি সিনেমায় কাজ করছিলেন—কিছু সিনেমা সুপারহিট, কিছু মোটামুটি ব্যবসা করছিল। কিন্তু ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ মুক্তির পর তাঁর জনপ্রিয়তা অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে যায়। দক্ষিণ ভারতের ছোট পরিসর থেকে উঠে এসে তিনি হয়ে উঠলেন ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের একজন। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করলেই অন্তর্জালে ঝড় ওঠে। কিন্তু কী এই জনপ্রিয়তার রহস্য?
শুরুর গল্প: কর্ণাটক থেকে দক্ষিণি সিনেমা
কর্ণাটকের মেয়ে রাশমিকা ২০১৬ সালে কন্নড় সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় পা রাখেন। এরপর তেলেগু সিনেমায়ও কাজ করেন। যদিও প্রাথমিক কয়েকটি সিনেমায় আলাদাভাবে চিহ্নিত হওয়ার মতো কিছু ছিল না।
২০১৮: ‘গীতা গোবিন্দম’ দিয়ে প্রথম সাফল্য
রাশমিকার ক্যারিয়ার মোড় নেয় ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া তেলেগু সিনেমা ‘গীতা গোবিন্দম’ দিয়ে। অল্প বাজেটে নির্মিত এই রোমান্টিক কমেডি সুপারহিট হয়। বিজয় দেবরাকোন্ডার সঙ্গে তাঁর জুটি দর্শকদের হৃদয় জয় করে। ছবির সংলাপ, দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং রাশমিকা রাতারাতি তরুণ প্রজন্মের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
‘ডিয়ার কমরেড’: অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা
এরপর মুক্তি পাওয়া ‘ডিয়ার কমরেড’ সিনেমায় রাশমিকা দেখান তাঁর অভিনয়ের গভীরতা। ছবিতে একজন নারী ক্রিকেটারের চরিত্রে যৌন হয়রানি এবং ব্যক্তিগত সংগ্রামের জটিল দিকগুলো তুলে ধরেন। এই ছবির মাধ্যমে তিনি দর্শক ও সমালোচকদের কাছে একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পান।
ব্লকবাস্টার ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’
২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ পুরো ভারতের সিনেমাপ্রেমীদের সামনে রাশমিকার এক নতুন দিক উন্মোচন করে। সুকুমার পরিচালিত এই ছবিতে তাঁর ‘শ্রীভাল্লি’ চরিত্রটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়। এরপর তিনি হিন্দি সিনেমা ‘গুডবাই’ দিয়ে বলিউডে অভিষেক করেন এবং জনপ্রিয়তার আরেক ধাপ এগিয়ে যান।
বহুমুখী অভিনয়ের ক্ষমতা
রাশমিকার বড় একটি গুণ হলো—সব ধরনের চরিত্রে তাঁর মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। ‘গীতা গোবিন্দম’-এর পাশের বাড়ির মেয়ে থেকে ‘ডিয়ার কমরেড’-এর নারী ক্রিকেটার এবং ‘অ্যানিমেল’-এর সাহসী চরিত্র—সবকিছুতেই তিনি সাবলীল।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
বর্তমানে রাশমিকা অভিনয় করছেন সালমান খানের বিপরীতে ‘সিকান্দার’ সিনেমায়। এটি তাঁর প্রথম পুরোপুরি বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তিনি সব ধরনের সিনেমায় কাজ করতে চান—কমার্শিয়াল থেকে আর্টহাউস, সবখানেই তাঁর আগ্রহ।
রাশমিকার এই যাত্রা প্রমাণ করে যে মেধা, কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ একজন অভিনেতার জীবন বদলে দিতে পারে। তাঁর জনপ্রিয়তার রহস্যও এটাই—তাঁর বহুমুখী প্রতিভা এবং দর্শকের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতা।
Leave a Reply