অভিযোগ: ৮০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছিল। তাঁর গলায় বিস্ফোরক বাঁধা ছিল এবং কাজ না করলে মাথা উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই তথ্য ইসরায়েলি গণমাধ্যম ‘দ্য হটেস্ট প্লেস ইন হেল’-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নাহাল ব্রিগেডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাজায় ৮০ বছরের ওই ফিলিস্তিনির গলায় বিস্ফোরক বাঁধেন। এরপর তাঁকে ইসরায়েলি সেনাদের অগ্রভাগে থেকে গাজা এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আট ঘণ্টা ধরে এ কাজ করানোর পর তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে গাজা সিটির জেইতুন এলাকা থেকে পালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পালানোর সময় অন্য একটি ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়ন সড়কে ওই দম্পতিকে দেখতে পায় এবং গুলি করে। তাদের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
ইসরায়েলি সেনারা প্রথমে এই দম্পতিকে গাজায় তাঁদের বাড়িতে খুঁজে পায়। তারা জানিয়েছিল যে, তাঁদের চলাফেরায় সমস্যা রয়েছে এবং তাই তারা বাড়ি থেকে পালাতে পারছে না। তখন সেনারা ওই বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে তাঁর বেতের লাঠির ওপর ভর দিয়ে সামনে হাঁটতে বাধ্য করে, তার স্ত্রীকে বাড়িতে আটকে রেখে।
একজন ইসরায়েলি সেনার দাবি, তাঁদের সেনা কমান্ডার এই ফিলিস্তিনি দম্পতিকে ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। ফিলিস্তিনি নাগরিকদের এমনভাবে ব্যবহার করা হয় যাতে বিপদ বা হামলা থেকে ইসরায়েলি সেনারা রক্ষা পায়।
এক সেনা জানায়, ফিলিস্তিনি বৃদ্ধ বাড়ির ভেতরে বিস্ফোরক বা যোদ্ধা আছে কি না, তা দেখতে বাড়িতে ঢুকছিলেন। এতে ইসরায়েলি সেনারা তাদের বদলে ওই বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে লক্ষ্য করে গুলি করার জন্য প্রস্তুত ছিল।
এক পর্যায়ে, ইসরায়েলি সেনারা বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে হুমকি দেয়, যদি তিনি আদেশ না মানেন তবে গলায় বাঁধা বিস্ফোরকটি টেনে দেয়ার মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হবে।
এভাবে আট ঘণ্টা ধরে মানবঢাল হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয় বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে। পরে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে দক্ষিণ গাজার দিকে হাঁটার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়, কিন্তু প্রায় ১০০ মিটার যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা তাদের গুলি করে হত্যা করে।
Leave a Reply