গাজা ও লেবানন থেকে লুট করা সম্পদ বিক্রি করছে ইসরায়েলি সেনারা

গাজা ও লেবানন থেকে লুট করা সম্পদ বিক্রি করছে ইসরায়েলি সেনারা

ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবানন থেকে লুটপাট করা সম্পদ বিক্রি করছে ইসরায়েলি সেনারা

নতুন এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ইসরায়েলি সেনারা গাজা ও লেবানন থেকে লুট করা সম্পদ অবৈধভাবে বিক্রি করছে।

ইসরায়েলি অনুসন্ধানী গণমাধ্যম হামাকম হাচি হাম (দ্য হটেস্ট প্লেস ইন হেল) সেনাদের চুরির অসংখ্য ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এসব লুট করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও যানবাহন।

লুট করা জিনিসপত্র সেনারা টেলিগ্রাম চ্যানেল, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছে।

ইসরায়েলের নাহাল ব্রিগেডের একজন কমান্ডার জানান, প্রথমে সেনারা স্মারক হিসেবে কিছু জিনিস নিলেও পরে তা ব্যাপক লুটপাটে পরিণত হয়। সেনাদের ব্যাগ তল্লাশি না হওয়ায় তারা নির্ভয়ে লুট চালিয়ে গেছে।

তদন্তে দেখা গেছে, শুধু সাধারণ সেনারা নয়, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও লুটপাটে জড়িত। এক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার গাজা থেকে ইলেকট্রনিক পণ্য চুরি করে নিয়ে গেছেন, যা তার অধীনস্থরা জানতেন।

আরেক সেনা জানায়, নগদ অর্থ নেওয়া সবচেয়ে সহজ, কারণ তা সহজেই খরচ করা যায়। শোনা যাচ্ছে, লাখ লাখ শেকেল লুট করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাদের নীতিমালা অনুসারে, পাওয়া অর্থ বা অস্ত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক। তবু গাজা ও লেবানন থেকে লুট করা ১০ কোটি শেকেল (২.৭৬ কোটি ডলার) সেনারা নিজেদের কাছে রেখেছে বলে জানা গেছে।

ওয়াইনেট নিউজ অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়া, লেবানন ও গাজা থেকে ২.৮ কোটি ডলার মূল্যের নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও অস্ত্র লুট করেছে।

আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধক্ষেত্রে লুটপাট যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে ইসরায়েলে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে স্বাভাবিকভাবে দেখা হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি সেনারা ঠেলাগাড়ি ভরে বাড়ি থেকে মালামাল লুট করছে।

২০২৩ সালে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি গাজায় লুটপাট বন্ধে হুঁশিয়ারি দিলেও, বাস্তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক সেনা গর্ব করে বলছেন, তিনি গাজা থেকে চুরি করা একটি রুপালি নেকলেস বান্ধবীর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, সেনারা কম্বল, আয়না, গৃহসজ্জার জিনিস চুরি করছে এবং ফিলিস্তিনি পরিবারের পানি ও খাবার সংযোগে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।

এই লুটপাট ও চুরির ঘটনা ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের আরও একটি প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.