বিএনপি-এনসিপি বাকযুদ্ধে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ

বিএনপি-এনসিপি বাকযুদ্ধে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি ও নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মধ্যে উত্তপ্ত বাকযুদ্ধ চলছে। সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা, সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা, নির্বাচনপূর্ব সংস্কার এবং জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচারসহ নানা ইস্যুতে প্রতিদিনই দল দুটির মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ পাচ্ছে। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাইলেও এনসিপি আগে সংস্কার ও বিচারের দাবি তুলছে। এনসিপির গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তাবও বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এনসিপি নেতারা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিশেষ করে, এনসিপির নেতা সারজিস আলমের “হাসিনার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়” বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেছেন। এসব পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের সুযোগ থাকলেও দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য বেড়েছে। সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যেই বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চেয়ে আসছে, যা তাদের কৌশলগত অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও ছাত্রদের নতুন দল এনসিপি দাবি করছে, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহারের ফলে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই নির্বাচনপূর্ব করতে হবে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য আরও দৃশ্যমান হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ আখতার হোসেন বাদল মন্তব্য করেছেন, রাজনৈতিক বিভেদ দেশকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। তিনি মনে করেন, সংস্কার ও বিচারের নামে নির্বাচন বিলম্ব করলে দেশের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়বে।

অন্যদিকে, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল আসলাম আদিব বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচন চাওয়া মানে জাতীয় নির্বাচন পেছানো নয়, বরং দুটি নির্বাচন একসঙ্গে করাও সম্ভব। এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রস্তুতি দরকার।

রাজনৈতিক এই টানাপোড়েনের মধ্যে সরকার ডিসেম্বরকে সম্ভাব্য নির্বাচনের সময়সীমা ধরে পরিকল্পনা করছে। তবে সংস্কার ও বিচারের প্রশ্নে মতানৈক্যের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.