ট্রাভেল এজেন্সির টিকিট সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ, এনবিআরের তদন্ত শুরু
দেশের শীর্ষস্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সি ‘শেয়ার ট্রিপ’সহ আরও ৩০টি এজেন্সির বিরুদ্ধে এয়ারলাইন্সের টিকিট সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি এই সিন্ডিকেটে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট এসব প্রতিষ্ঠানের আয়কর নথি পর্যালোচনা শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সৌদি এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, গালফ এয়ার, আমিরাত এয়ারলাইন্সসহ ১৬টি এয়ারলাইন্সের জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) এবং ৩০টি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক, পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কর ফাঁকির বিষয়ে তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোতে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এনবিআরের আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার মোহাম্মদ আবদুর রকিব বলেন, “প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। অথচ তাদের বিমান টিকিট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র সিন্ডিকেট চালিয়ে আসছে। সরকার এই সিন্ডিকেট ভাঙতে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।”
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের রুটে টিকিট সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিদেশি এয়ারলাইন্সের জিএসএ ও ট্রাভেল এজেন্সির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ফলে শেয়ার ট্রিপস লিমিটেড, সানসাইন এক্সপ্রেস ট্রাভেলস, আল গাজী ট্রাভেল লিমিটেড, জেএস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরসহ ৩০টি ট্রাভেল এজেন্সির কর ফাইল পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের জিএসএ ইউনাইটেড লিঙ্ক লিমিটেডের এমডি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ, জাজিরা জিএসএ জেড এভিয়েশনের মেরিনা আহমেদ, সালাম এয়ারের জিএসএ এমএ লতিফ শাহরিয়ার জাহিদিসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
সরকারের সাম্প্রতিক নীতিগত সিদ্ধান্তের ফলে এয়ার টিকিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, যাত্রীদের নাম ও পাসপোর্ট তথ্য ছাড়া টিকিট বুকিংয়ের অনিয়ম বন্ধ করা হয়েছে। ফলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার সুযোগ কমে গেছে এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে টিকিটের দাম নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।
বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সমন্বিত পদক্ষেপের ফলে এই তদন্ত আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। যদি তদন্তে কর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply