জনবান্ধব ভূমি সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প’। এ প্রকল্পের আওতায় একটি সমন্বিত ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি সেবার প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। আজ এগুলোর মধ্যে ৪টি সফটওয়্যারের মানোন্নয়ন ও ১টি নতুন উদ্ভাবিত সফটওয়্যার নতুন ভাবে তৈরি করে জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করলেন ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
এ উপলক্ষে ভূমি ভবনে অটোমেশন প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভূমি সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এঁর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ভূমি উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের শহীদদের অন্যতম স্বপ্ন ছিল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। আর নিরাপদ বাসস্থান হচ্ছে অন্যতম মৌলিক অধিকার। এজন্য প্রয়োজন একখন্ড মান সম্মত ও নির্ভেজাল ভূমি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অটোমেশন প্রকল্পের অধীন নতুন সফ্টওয়্যার চালুর ফলে ঘরে বসেই মানুষ ঝামেলাহীন ও স্বাধীন ভাবে অনলাইনে নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, হোল্ডিং নম্বর ও খতিয়ানসহ ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন। এতে করে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম, সামাজিক হানাহানি, মামলা-মোকদ্দমা হ্রাস পাবে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠবে।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ২০১৭ সালে সারা দেশে অনলাইনে নামজারি সেবা চালু হলেও বর্তমানের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে একটি উন্নততর সংস্করণ তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নামজারি আবেদন পদ্ধতি আরও সহজীকরণ করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সিস্টেমের সংগে ডাটা শেয়ারিং এর সুযোগ থাকায় নাগরিক আবেদনের অনেক তথ্য সিস্টেম হতে অটোমেটিক ভাবে যাচাই করা যাবে। নামজারি প্রক্রিয়ার মধ্যেই অটো হোল্ডিং ও অটো সংশোধনের প্রভিশন থাকায় নাগরিকের ভোগান্তি আগের তুলনায় অনেক কমবে। একই জমি বারবার মিউটেশন হওয়ারও ঝুঁকি থাকবে না।
উল্লেখ্য, ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থাপনা সিস্টেমকে আরও বেশি জনবান্ধব করতে উন্নত সংস্করণে মিউটেশনের সাথে সাথে অটো হোল্ডিং সৃষ্টি ও হোল্ডিং নাম্বার প্রদান, পূর্বের হোল্ডিং হতে জমি কর্তন, রেকর্ডিয় হোল্ডিং হতে বর্তমান হোল্ডিং পর্যন্ত ধারাবাহিকতার হোল্ডিং সৃজন, নাগরিক প্যানেল হতে এন্ট্রিকৃত হোল্ডিং খোঁজে বের করার সুবিধা, ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণের আধুনিক ক্যালকুলেটর সংযোজনসহ অন্যান্য সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
অপরদিকে, দুপুরে ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ ডেমরা করিম জুট মিলস্ মিলনায়তনে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর (ডি এল আর) আয়োজিত পঞ্চাশ দিন ব্যাপী সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হলে ডিজিটাল জরিপ কাজ সম্পন্ন করা। ভূমি খাতের সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রশাসনের বি সি এস ক্যাডার কর্মকর্তাদের হাতে-কলমে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক এবং আধুনিক-যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ গ্রহণের বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞানের আলোকে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ডিএল আর মহাপরিচালক মহ. মনিরুজ্জামনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহেমেদ, ভুমি সংস্কার বোর্ডের চেয়াম্যান এ. জে. এম. সালাহউদ্দিন নাগরী ও ডিএল আর পরিচালক মো: মোমিনুর রশীদ। এ কোর্সে বি সি এস (প্রশাসন) পুলিশ, বন ও রেলওয়ে এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের ৫২ জন কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।
Leave a Reply